বাঙালির ইতিহাস গ্রন্থের রচয়িতা কে? [MCQ]

[Question] বাঙালির ইতিহাস গ্রন্থের রচয়িতা কে?

(ক)রাখালদাস বন্দোপাধ্যায়
(খ)পন্ডিত হরপ্রসাদ শাস্ত্রী
(গ)নীহাররঞ্জন রায়
(ঘ)আর.সি. মজুমদার

উত্তরঃ (গ) নীহাররঞ্জন রায়


সংক্ষেপে ব্যাখ্যাঃ

বাঙালির ইতিহাস গ্রন্থের রচয়িতা হলেন নীহাররঞ্জন রায় ৷

ইতিহাসের যুক্তি

বাঙলার ইতিহাস ও বাঙালীর ইতিহাসে প্রভেদ কোথায় এ কথা বিশদভাবে ব্যাখ্যা করিবার প্রয়োজন আছে বলিয়া মনে হয় না। যে বিষয়ের আলোচনার জন্য এই গ্রন্থ, তাহাকে বাঙলার ইতিহাস বলিলে আপত্তি করিবার কিছু নাই; তবু, বাঙালীর ইতিহাস যখন বলিতেছি তখন তাহার কারণ নিশ্চয়ই একটু আছে।

বাঙালীর ইতিহাসের অর্থ

স্বর্গত রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয়ের ইংরেজি ভাষায় রচিত বাঙলার পাল রাজবংশের কাহিনী এবং তাঁহার ‘বাঙ্গালার ইতিহাস’ বহুদিন প্রাচীন বাঙলার প্রামাণিক ইতিহাস বলিয়া গণ্য হয়। কয়েক বৎসর আগে শেষোক্ত গ্রন্থের তৃতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হইয়াছে; এখনও যে সে গ্রন্থের মূল্য পণ্ডিতমহলে স্বীকৃত ইহাই তাহার প্রমাণ। স্বর্গত রমাপ্রসাদ চন্দ মহাশয়ের ‘গৌড়রাজমালা’ও ঐতিহাসিকের কাছে সুপরিচিত এবং মূল্যবান গ্রন্থ। ‘গৌড়রাজমালা’ প্রকাশিত হইবার পর শ্রীযুক্ত রমেশচন্দ্র মজুমদার, হেমচন্দ্র রায়চৌধুরী, নলিনীকান্ত ভট্টশালী, বিনয়চন্দ্র সেন, হেমচন্দ্র রায়, রাধাগোবিন্দ বসাক, প্রমোদলাল পাল, স্বর্গত ননীগোপাল মজুমদার, গিরীন্দ্রমোহন সরকার এবং আরও অনেক প্রখ্যাত পণ্ডিত ও মনীষী প্রাচীন বাঙলার রাজকীয় ইতিহাসের বিভিন্ন অধ্যায় রচনা করিয়া তুলিয়াছেন। এ কথা স্বীকার করিতেই হয় যে ইহাদের এবং অন্যান্য আরও অনেক গবেষকের সম্মিলিত চেষ্টা ও সাধনার ফলে আজ প্রাচীন বাঙলার ইতিহাস আমাদের কাছে অল্পবিস্তর সুপরিচিত; অন্তত মোটামুটি কাঠামো সম্বন্ধে অস্পষ্ট ধারণা কিছু নাই।

কিন্তু, একটু লক্ষ্য করিলেই দেখা যাইবে, আজ প্রায় পঞ্চাশ বৎসরের গবেষণার ফলে, সমবেত চেষ্টার ফলে, প্রাচীন বাঙলার ইতিহাস সম্বন্ধে আমাদের যাহা জানিবার সুযোগ হইয়াছে তাহার অধিকাংশই প্রাচীন রাজবংশাবলীর কথা-রাজা, রাজ্য, রাজধানী, যুদ্ধবিগ্রহ এবং জয়পরাজয়ের কথা। সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রশাসনপদ্ধতি এবং রাজকর্মচারীদের সম্বন্ধে কিছু কিছু সংবাদ জানিবার সুযোগও হইয়াছে। প্রাচীন বাঙলাদেশ সম্বন্ধে যে সমস্ত লেখমালা ও যে কয়েকখানি সাহিত্যগ্রন্থ সম্পাদিত ও প্রকাশিত হইয়াছে তাহা হইতেও এইসব রাজকীয় সংবাদ ছাড়া কিংবা রাষ্ট্রশাসনপদ্ধতির কথা ছাড়া আর কিছু আহরণ

করিবার চেষ্টা কিছুদিন পূর্ব পর্যন্ত বিশেষ কিছু হয় নাই। কোনও কোনও সম্পাদক, যেমন স্বর্গত পদ্মনাথ ভট্টাচার্য, ননীগোপাল মজুমদার, গঙ্গামোহন লস্কর, পারজিটার, নগেন্দ্রনাথ বসু, লালমোহন বিদ্যানিধি, অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়, কীলহর্ন, শ্রীযুক্ত নলিনীকান্ত ভট্টশালী, রাধাগোবিন্দ বসাক, দীনেশচন্দ্র সরকার, দীনেশচন্দ্র ভট্টাচার্য প্রমুখ পণ্ডিতেরা সমাজ সম্বন্ধেও কিছু কিছু তথ্যের প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করিয়াছেন। কিন্তু এই সমাজ সর্বত্রই বর্ণাশ্রমবদ্ধ সমাজ, এবং তাঁহাদের আহৃত সমাজ-সংবাদ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ব্রাহ্মণ ও অন্যান্য উচ্চতর বর্ণের সমাজ-সংবাদ।

এ-যাবৎ ‘সামাজিক অবস্থা’ বলিতে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ‘সমাজ’ কথাটা অত্যন্ত সংকীর্ণ অর্থে, উচ্চতর বর্ণ-সমাজ অর্থে ব্যবহৃত হইয়াছে; এবং সে সংবাদও অত্যন্ত অপ্রচুর। মোটামুটি ইহাই ছিল কিছুদিন পূর্ব পর্যন্তও বাঙলার ইতিহাসের উপাদান। গ্রন্থাকারে বা প্রবন্ধাকারে প্রাচীন বাঙলার যত ইতিহাসাধ্যায় রচিত হইয়াছে তাহাতে রাজ্য, রাজা, রাজকর্মচারী, রাষ্ট্রশাসনপদ্ধতি এবং উচ্চতর বর্ণ-সমাজসম্পৃক্ত সংবাদ ছাড়া আর কিছু পাওয়া যায় না। ইহাই আমাদের বাঙলার ইতিহাস।..[বই থেকে]

পরিশেষে, বাঙালির ইতিহাস গ্রন্থের রচয়িতা হলো নীহাররঞ্জন রায় ৷

রিপোর্ট করুন

“আমরা(Priobd.com) সকল তথ্য সঠিক দেওয়ার জন্য সর্বদা চেষ্ঠা করেছি ৷ আপনার যদি মনে হয় এই আর্টিকেলে কোনো তথ্য ভুল হয়েছে, দয়া করে প্রশ্নসহ যে অংশটি ভুল হয়েছে তা উল্লেখ করে আমাদের জিমেল করুণ”
Gmail: [email protected]

5/5(3 votes)
Scroll to Top