[Question] বেনের মেয়ে উপন্যাসের রচয়িতা কে?
(ক) | জসীমউদ্দিন |
(খ) | হরপ্রসাদ শাস্ত্রী |
(গ) | রমেশচন্দ্র দত্ত |
(ঘ) | শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় |
সংক্ষেপে ব্যাখ্যাঃ
বেনের মেয়ে উপন্যাসের রচয়িতা হলেন হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ৷৷
একটু পড়ুনঃ
তারাপুকুরের রূপা বাদী এখন সাতগাঁয়ের রাজা। তিনি মহারাজাধিরাজ পরমেশ্বর-পরমভট্টারক-পরমসৌগত শ্রীশ্রী ১০৮ রূপনারায়ণ-সিংহ উপাধি লইয়া প্রবল-প্রতাপে সাতগাঁ-শহর ও সপ্তগ্রামভুক্তি শাসন করিতেছেন। অন্ততঃ ১০,০০০ (দশ হাজার) বান্দী তাঁহার পল্টনে ভর্তি হইয়াছে। তাঁহার হাতি, ঘোড়া, রথ বিস্তর আছে। তারাপুকুর গ্রামখানি কুন্তী নদীর ধারে, এখন যেখানে মগরা হইয়াছে, উহারই নিকটে। পূর্বকালে ঐখানে তারাদেবীর এক মন্দির ছিল এবং মন্দিরের সম্মুখে এক প্রকাণ্ড দীঘি ছিল।
যে সময়ের কথা হইতেছে, তখন মন্দির পড়িয়া গিয়াছে, দীঘি আছে, সেই দীঘিরই নাম তারাপুকুর। তারাপুকুর গ্রামখানি ঐ দীঘি হইতে ১ মাইল পূর্বে। সেখানেও আজ ভারি ধূমধাম। কারণ, রূপা রাজা ঠিক করিয়াছে, গাজন তাহার বাড়ি হইতেই বাহির হইবে, বাহির হইয়া সাতগাঁ-এর বড় রাস্তা দিয়ে ধরমপুরের বিহারে পৌঁছিবে ও তাহার একটু দক্ষিণে বিহার-প্রতিষ্ঠা হইবে।
এবার বেশি ধূমের কারণ, রূপার এই প্রথম গাজন ও বিহার-প্রতিষ্ঠা, রূপার জীবনে প্রধান সৎকাজ। রূপা লুই-সিদ্ধার চেলা। সে এবার অনেক কাকুতি-মিনতি করিয়া লুই-সিদ্ধাকে ধরিয়াছে, ‘গুরুদেব, এই বিহার-প্রতিষ্ঠায় গাজনে আপনাকেই মূল সন্ন্যাসী হইতে হইবে।’ সিদ্ধাচার্য লুই-পাদ দলবল লইয়া তারাপুকুর গ্রামে ২/৩ দিন হইতে আড্ডা লইয়াছেন। অনেক বড় বড় বৌদ্ধ পণ্ডিত, সিদ্ধ পুরুষ, সিদ্ধাচার্যও আসিয়া জুটিয়াছে। নাঢ় পণ্ডিতের সঙ্গে লুই-এর বনে না; রূপা তাঁহাকেও আনিয়াছে।
নাঢ় পণ্ডিতের স্ত্রী বা শক্তি নাঢ়ীও আসিয়াছে। এ নাঢ়ী বড় কম মেয়ে নয়। ইহার বাপের দেওয়া নাম নিগু এখন প্রায় লোপ হইয়া আসিয়াছে। জ্ঞানমার্গে ইঁহার বড়ই প্রতিপত্তি বলিয়া ইঁহার নাম জাহির হইয়াছে-জ্ঞান-ডাকিনী। নাঢ়া ও নাঢ়ীর সঙ্গে বহুশত নাঢ়া ও নাঢ়ী আসিয়াছে। গ্রাম তারাপুকুর ও দীঘি তারাপুকুরের মাঝখানে হৈ-হৈ রৈ-রৈ কাণ্ড বাধিয়া গিয়াছে। কেহ তাঁবুতে রহিয়াছে, কেহ তালপাতার কুঁড়ে বাঁধিয়া রহিয়াছে, কেহ খেজুর-পাতার কুঁড়ে বাঁধিয়া আছে। কোথাও বা বড় বড় বাঁশের মেরাপের উপর বড় বড় সামিয়ানা ও পাল খাটান আছে; নীচে অসংখ্য লোক; কেহ ঘুমাইতেছে, কেহ পড়িয়া গড়াগড়ি দিতেছে, কেহ গল্প করিতেছে, কেহ হাই তুলিতেছে, কেহ গান করিতেছে, কেহ গাঁজায় দম দিতেছে, কেহ বা ধান্যেশ্বরীর উপাসনা করিতেছে।
কিন্তু রূপার এমনি দবদবা যে, এত লোকেও কোনরূপ গোলযোগ বা বিশৃঙ্খলা কিছুই নাই। এই সমস্ত লোকের পাহারা দিবার জন্য শএক দু’শ বাগ্দী বড় বড় বাঁশের লাঠি ঘাড়ে করিয়া ঘুরিয়া বেড়াইতেছে। লাঠির প্রত্যেক পাপেই এক একটি গাঁঠ, পাকা তল্লাবাঁশে বহুকাল তেল খাওয়াইয়া লাঠি লাল করিয়া তুলিয়াছে। লাঠিয়ালও খুব জোয়ান, সাড়ে ছ’হাতের উপর লম্বা, মাথায় বাবরিকাটা বড় বড় চুল। তাহাদের লাঠি মাথার উপর আরও দেড় হাত।..পুরো বইটি পড়ুন ৷
সবশেষে, বেনের মেয়ে উপন্যাসের রচয়িতা হলো হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ৷৷
Also Read More:—