বাংলাদেশের কোন ক্ষুদ্র নৃ – গোষ্ঠীর মানুষের নিজস্ব বর্ণমালা ও ভাষা আছে? [MCQ]

4.7/5(8 votes)

Question: বাংলাদেশের কোন ক্ষুদ্র নৃ – গোষ্ঠীর মানুষের নিজস্ব বর্ণমালা ও ভাষা আছে?

উত্তরঃ C. চাকমা

Explanation:- বাংলাদেশের চাকমা ক্ষুদ্র নৃ – গোষ্ঠীর মানুষের নিজস্ব বর্ণমালা ও ভাষা আছে ৷

চাকমা বর্ণমালা

চাকমা ভাষার নিজস্ব বর্ণমালা রয়েছে রয়েছে (রহমান, ২০১৪)। চাকমা বর্ণমালা দেখতে বার্মিজ বর্ণমালার মতো মনে হলেও এটি বার্মিজ বর্ণমালা নয়। খেমার বর্ণমালা হতে চাকমা বর্ণমালার উৎপত্তি হয়েছে (গ্রিয়ারসন, ১৯০৩)। বার্মিজ বর্ণমালাও খেমার বর্ণমালা হতে উৎপত্তি হয়েছে। তবে বার্মিজ বর্ণমালাগুলো চাকমা বর্ণমালার চাইতেও বেশি বিকৃত হয়েছে (গ্রিয়ারসন, ১৯০৩)। সেজন্য বলা যায়, বার্মিজ বর্ণমালার আগে চাকমা বর্ণমালা উৎপত্তি হয়েছে।

চাকমা বর্ণমালায় প্রথম মুদ্রণকৃত বই হচ্ছে বাইবেল। ১৮৬০ সালে প্রথম খ্রিষ্টান মিশনারিরা এলাহাবাদের একটি প্রেস থেকে চাকমা লিপিতে বাইবেলের অনুবাদ প্রকাশ করেন (রহমান, ২০১৪)। ১৯০৩ সালে ভাষাতত্ত্ববিদ গ্রিয়ারসন চাকমা বর্ণমালায় গল্পও লিপিবদ্ধ করেন। ১৯৫৯ সালে নোয়ারাম চাকমা তার ‘চাকমা পথম শিক্ষা’ বইটি প্রকাশ করেন। ১৯৬৯ সালে প্রকাশিত বিরাজ মোহন দেওয়ানের ‘চাকমা জাতির ইতিবৃত্ত’ বইয়ে ‘চাকমা বর্ণমালা’ প্রকাশিত হয়। তাছাড়া শ্রদ্ধালংকার মহাস্থবিরের ‘এয শিঘি’ (১৯৮৭), ‘চাঙমা সাহিত্য পত্রিকা’ (২০০১), ‘শিবচরণ সাহিত্য কেন্দ্র’ (২০০২)-এ চাকমা বর্ণমালায় ছড়া, কবিতা, গল্প প্রকাশিত হয়েছে।

২০০৭ সাল থেকে উপ-আনুষ্ঠানিক শিক্ষা কর্মসূচির আওতায় ব্র্যাক, জাবারাং, সেভ দ্য চিলড্রেন চাকমা ভাষায় শিক্ষাদানের(প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি) জন্য চাকমা বর্ণমালায় প্রচুর বই প্রকাশ করেছে। এরই মধ্যে চাকমা বিভিন্ন ফন্ট ও ইউনিকোড চাকমা ফন্টও তৈরি করা হয়েছে। মিজোরামের ‘চাকমা অটোনোমাস ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিল’ প্রথম থেকে দশম শ্রেণির জন্য একটি করে টেক্সট বই চাকমা ভাষা ও চাকমা বর্ণমালায় বই প্রকাশ করে। আরো আশার কথা হলো, বাংলাদেশ সরকার প্রাক-প্রাথমিক ও প্রাথমিক শিক্ষার জন্য চাকমাসহ অন্যান্য ভাষায় এবং চাকমা বর্ণমালাসহ অন্যান্য বর্ণমালায় টেক্সট বই ও সহায়ক শিক্ষা উপকরণ প্রকাশ করেছে। এটি খুব প্রশংসনীয় উদ্যোগ।

Scroll to Top