Question: কোন উপজাতির ধর্ম ইসলাম?
Explanation:- পাঙন উপজাতির ধর্ম ইসলাম ৷
উপজাতির ধর্ম বিশ্বাস ও ট্যাবু
গারোদের সাংসারেক এবং চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের কতিপয় উপজাতির বৌদ্ধধর্ম ছাড়া অন্য কোনো উপজাতির সুনির্দিষ্ট কোনো ধর্ম নেই। প্রাচীনকাল থেকে প্রচলিত সংস্কার, বিশ্বাস ও প্রথাই তাদের ধর্ম। গারোদের সাংসারেক ধর্মও এখন বিলুপ্তপ্রায়। তাদের অধিকাংশই এখন খ্রিস্টধর্মাবলম্বী। তবে সাংসারেক ধর্মের পর্ব-পার্বণও তারা কিছু কিছু পালন করে।
সাঁওতালরা অধিকাংশই খ্রিস্টান, কিন্তু তারা স্ব-স্ব প্রচলিত প্রথা মেনে চলে। ওরাওঁ, মণিপুরী এবং বৌদ্ধ উপজাতিগুলির মধ্যে অমাবস্যা-পূর্ণিমা বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। পূর্ণিমায় তারা বহুবিধ ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পালন করে। ওরাওঁরা ডাক ও খনার বচনে বিশ্বাসী। যাত্রার শুভাশুভ সম্পর্কে তাদের বিশ্বাস খনার বচনের অনুরূপ, যেমন যাত্রাকালে হোঁচট খাওয়া, পিছু ডাক, টিকটিকির ডাক, মৃত্যুসংবাদ, লাশ দেখা, মরাডালে কাকের ডাক, শূন্য/পূর্ণ কলস দর্শন ইত্যাদি সংস্কার তারা মেনে চলে।
ওরাওঁরা পূর্বদিক থেকে হাল চালনা করে এবং শুভদিন দেখে গৃহ নির্মাণ করে। রাতে কেশবিন্যাস করা, মহিলাদের চুল বাইরে ফেলা, সূর্যাস্তে ঘর ঝাড়ু দেওয়া, সন্ধ্যাবেলা কাউকে কিছু দেওয়া, রাতে পেঁচার ডাক ও কুকুরের কান্না ইত্যাদি তাদের নিকট অশুভ। রমণী বশীকরণ, গাভীর প্রথম দোহনের দুধ দান করা, প্রসূতি ও ঋতুবতীর গোশালায় না যাওয়া, ভাসুরের নাম উচ্চারণ না করা, মন্ত্রতন্ত্র ও ডাইনিতে বিশ্বাস করা ইত্যাদিও ওরাও সমাজে প্রচলিত। ওরাওঁদের বিশ্বাস, মানুষের রোগবালাই, অকালমৃত্যু ইত্যাদির জন্য ডাইনিরাই দায়ী। তারা ডাইনিদের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কবিরাজের শরণাপন্ন হয়। গারোদের মধ্যে ডাইনি-বিশ্বাস না থাকলেও তাদের বিশ্বাস, কোনো কোনো মানুষ রাতে বাঘ হয়ে গৃহপালিত পশু ধরে নিয়ে খেয়ে ফেলে। হিংস্র জন্তুর আক্রমণে নিহত ব্যক্তি জন্তু-জানোয়ার হয়ে পুনরায় জন্মগ্রহণ করে।
ওরাওঁদের বিশ্বাস, মৃত ভূমিষ্ঠ শিশুর প্রেতাত্মাও পুনর্জন্ম নেয়। কবিরাজরা এসব অনভিপ্রেত শক্তির আবির্ভাবকে বন্ধ করতে পারে। ওরাওঁ গর্ভবতীর ইঁদুর ও বাইন মাছ খাওয়া নিষেধ। এতে জাতক কদাকার হবে বলে তাদের বিশ্বাস। প্রসবের পর ওরাওঁ প্রসূতির খেসারির ডাল, আলু, ঠাণ্ডা পানি ও বাসি খাবার খাওয়া নিষেধ। মণিপুরীরা খোলা চুলে গর্ভবতীকে বাইরে যেতে দেয় না; রাতে দূরে কোথাও যাওয়া এবং নদী/সাঁকো পার হওয়াও তাদের জন্য নিষিদ্ধ।
মালপাহাড়দের বিশ্বাস, বিবাহ ও সন্তান প্রসবের সময় মা ও শিশুকে ভূতে ধরতে পারে। সেজন্য তারা সব সময় সতর্ক থাকে। খাসিয়া ও মুণ্ডাদের বিশ্বাস, মৃতশিশু ও পূর্বপুরুষদের প্রেতাত্মা ঘরে আসতে পারে। এজন্য তারা প্রেতাত্মার উদ্দেশ্যে পাথরের বেদি নির্মাণ করে। সব উপজাতিই গৃহদেবতায় বিশ্বাসী। তাদের মঙ্গলামঙ্গল এ গৃহদেবতার খুশি-অখুশির ওপর নির্ভর করে।