মাদার তেরেসা কোন ধর্মের অনুসারী ছিলেন?
সঠিক উত্তর দেখুন
উত্তরঃ (D) ক্যাথলিক ধর্ম ৷
Explanation
Explanation
মাদার তেরেসা শৈশব থেকেই ছিলেন ধর্মপরায়ণ
ঘণ্টার পর ঘণ্টা চার্চে সময় কাটাতেন। খুব ভালোবাসতেন মিশনারিদের ধার্মিক জীবনের গল্প শুনতে। বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে যুগোস্লাভিয়ার মিশনারিরা ধর্ম প্রচার ও সেবাধর্মের ব্রত নিয়ে কলকাতায় আসেন। তাঁদের মিশনের নাম ছিল ‘বেঙ্গল মিশন ফিল্ড’।
১৯২৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর একজন জেসুইট বা মিশনারি নেতা বেঙ্গল মিশন ফিল্ড সম্পর্কে যুগোস্লাভিয়ায় একটি উৎসাহভরা চিঠি লিখেন। স্কুলের যেসব ছাত্রছাত্রী ধর্মীয় ও সেবা সংগঠন সোভালিটির সদস্য, চিঠিটি তাদের পড়ে শোনানো হয়। সেখানে লেখা থাকত কেমন করে মিশনারিরা পৃথিবীর দারিদ্র্যপীড়িত বিভিন্ন অঞ্চলের ক্ষুধার্ত ও অসুস্থ মানুষের সেবা করছেন। কীভাবে তাঁরা হাসি ফোটাচ্ছেন দুঃখী মানুষের মুখে। আর্তমানবতার সেবায় মিশনারিরা কীভাবে নিজেদের সঁপে দিয়েছেন ইত্যাদি।
এসব বিবরণ শুনে শুনে ১৫ বছরের কিশোরী অ্যাগনেস ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত হন। এই ভালোবাসা থেকেই মাত্র ১২ বছর বয়সে তিনি ধর্মীয় জীবনযাপনের সংকল্প নেন। ১৯২৮ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য ১৮ বছর বয়সে গৃহত্যাগ করেন তেরেসা। সেই তার মা ও বোনের সাথে শেষ দেখা। একজন মিশনারিজ হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন সিস্টার্স অব লরেটো সংস্থায়।
পৃথিবীতে যে অল্প কিছু মানুষ মানুষকে ভালোবেসে মানুষের শান্তির জন্য, সার্বিক অর্থে মানবকল্যাণের জন্য জীবনের প্রায় পুরোটা সময় ব্যয় করে গেছেন, তাঁদের অন্যতম মাদার তেরেসা। মানবতার দেবী।
একজন নারী। যাঁর হাত ধরে এসেছে মুক্তি ঠিক যেমন ভোরের নরম আলো একটি নতুন দিনের বার্তা নিয়ে আবির্ভূত হয়। রোগ, শোক, জরা, মৃত্যু তাঁর হৃদয়কে করেছে ব্যথিত। পীড়িত হৃদয়ের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করতে ভৌগোলিক দূরত্ব যার কাছে বড় বেশি তুচ্ছ মনে হয়েছে।
আমরা স্মরণ করতে পারি তাঁর কিছু বাণী ও কর্মের মাধ্যমে। ‘দুস্থরা অবশ্যই জানে, আমরা তাদের ভালোবাসি’-মাদার তেরেসা আজীবন এ কথা বলেছেন, বিশ্বাস করেছেন এবং চর্চা করেছেন।
মাদার তেরেসা যে শুধু অর্থনৈতিক দারিদ্র্য নিয়ে ভাবতেন তা নয়; যারা নানা কারণে মানসিক কষ্টে অসহায় জীবনযাপন করেছে, তাদের কষ্ট, তাদের অসহায়ত্ব কীভাবে দূর করা যায়, তা ছিল মাদার তেরেসার কাছে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই কষ্ট, এই অসহায়ত্ব দূর করার জন্য তিনি অনেক কাজ করেছেন এবং এটিকে তিনি অনেক বেশি কঠিন মনে করতেন। এ সম্পর্কে নোবেল বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘শুধু দরিদ্র দেশগুলোতে নয়, পশ্চিমা দেশগুলোর সমস্যা দূর করা আরও কঠিন।
রাস্তার ক্ষুধার্ত একজনকে ডেকে এনে এক প্লেট ভাত, এক টুকরো রুটি দিয়ে আমি তার ক্ষুধা নিবারণ করে সন্তুষ্ট হতে পারি। কিন্তু সমাজ যাকে পরিত্যাগ করেছে, সে ভালোবাসাবঞ্চিত, সমাজে সে অনাকাঙ্ক্ষিত, সে ভীত, তার অবস্থা অনেক বেশি করুণ। তার জন্য সত্যিকার অর্থে কিছু করা সত্যি দুরূহ।’
হ্যাঁ, মাদার তেরেসা ছিলেন ভালোবাসাবঞ্চিত, অনাকাঙ্ক্ষিত, ভীত ও অসহায়দের বন্ধু। তিনি ছিলেন আশ্রয়হীনদের আশ্রয়দাত্রী।
Recommended For You
- মাদার তেরেসা দার্জিলিং যাওয়ার পথে ঈশ্বরের কণ্ঠস্বর শুনতে পেলেন ৷
- মাদার তেরেসা প্রথম জীবনে লরেটো সংঘ করেন ৷
- মাদার তেরেসা ১৯৭৯ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান ৷
- মাদার তেরেসা ১৯১০ সালে জন্মগ্রহণ করেন ৷
- মাদার তেরেসা ট্রেনে করে দার্জিলিং যান ৷
- মাদার তেরেসার আসল নাম বা পুরো নাম আঞ্জেজি গনসে বোজাক্সহিউ ৷
- মাদার তেরেসা কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত সেবা প্রতিষ্ঠান হলো নির্মল হৃদয় ৷
- মাদার তেরেসা ১৯৯৭ সালে ৮৭ বছর বয়সে মারা যান ৷
- মাদার তেরেসা আলবেনিয়ার নাগরিক ছিলেন ৷
- মাদার তেরেসা দুঃখী মানবতার সেবার কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ ১৯৭৯ সালে “নোবেল শান্তি পুরস্কার” অর্জন করেন ৷