বিভিন্ন দেশের জাতীয় মসজিদ | National Mosques of Different Countries

5/5(1 vote)

জাতীয় মসজিদ: বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই মুসলিম রয়েছে ৷ আর মুসলমানদের এবাদতখানা হলো মসজিদ ৷ মসজিদ আল্লাহর ঘর। এটি জান্নাতের বাগান এবং পরকালের বাজার। মসজিদের সঙ্গে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের জরুরি অনেক বিষয় ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আমাদের ইমান-আমল, আখলাক-ইবাদত, শিক্ষাদীক্ষা, সভ্যতা-সংস্কৃতি সবকিছুই মসজিদকেন্দ্রিক। তাই ইসলামে মসজিদের অবস্থান অন্যসব ধর্মের উপাসনালয়ের মতো নিছক ইবাদত-বন্দেগির জন্য নির্দিষ্ট কোনো ইমারত বা বিল্ডিংয়ের নাম নয়; বরং মসজিদ মুসলিমসমাজের ধর্মীয়, রাজনৈতিক, সামাজিক, চারিত্রিক উন্নতি ও সমৃদ্ধির প্রাণকেন্দ্র।

দুনিয়ার ভ্রষ্টতা ও পাপ-পঙ্কিলতার আঁধার দূরীকরণে ইসলাম হলো হিদায়াতের আলোকবর্তিকা। আর মসজিদ হলো ওই দীপ্তপ্রদীপ, যার আলোয় সমাজের সর্বত্র হয়ে ওঠে আলোকময়; যার আলোয় সমগ্র জগৎ হয় জ্যোতির্ময়।

মুসলিম সমাজ ও রাষ্ট্রে মসজিদের অবস্থান হলো মানবদেহের হৃদপিণ্ডের মতো, যেখান থেকে ইলম ও হিদায়াতের সঞ্জীবনী-সুধা সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে পৌঁছে থাকে। কোনো সমাজ বা এলাকায় মসজিদ থাকা মানে ইসলাম থাকার প্রমাণ বহন করে। কেননা, মসজিদ হলো ইসলামের অন্যতম নিদর্শন বা প্রতীক। মসজিদের সঙ্গে সমাজের ছয় শ্রেণির মানুষ সম্পৃক্ত থাকেন এবং তাঁদের মাধ্যমেই মসজিদ পরিচালনা, ব্যবস্থাপনা ও আবাদ হয়ে থাকে। তাঁরা হলেন ইমাম, খতিব, মুআজ্জিন, খাদিম, মুতাওয়াল্লি বা মসজিদ কমিটি এবং সাধারণ মুসল্লি।

বিভিন্ন দেশের জাতীয় মসজিদ | National Mosques of Different Countries

বিভিন্ন দেশের জাতীয় মসজিদ | National Mosques of Different Countries

প্রিয় ভিউয়ার, বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই একটি প্রধান মসজিদ রয়েছে, যা ঐদেশের জাতীয় মসজিদ নামে পরিচিত ৷ আজ আমরা বিভিন্ন দেশের জাতীয় মসজিদ এবং অবস্থান জানবো ৷

দেশজাতীয় মসজিদ
বাংলাদেশবায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ, ঢাকা ৷
ভারতজামে মসজিদ, দিল্লি ৷
পাকিস্তানফয়সাল মসজিদ, ইসলামাবাদ ৷
চীননিউজি মসজিদ, বেইজিং ৷
নেপালমসজিদ-ই-তুবা, কাঠমান্ডু ৷
মালয়েশিয়াজাতীয় মসজিদ (মসজিদ নেগারা), কুয়ালালামপুর ৷
ইন্দোনেশিয়াইস্তিকলাল মসজিদ, জাকার্তা ৷
ইরানইমাম মসজিদ, ইসফাহান ৷
সৌদি আরবআল-মসজিদ আল-হারাম, মক্কা ৷
সংযুক্ত আরব আমিরাতশেখ জায়েদ গ্র্যান্ড মসজিদ, আবুধাবি ৷
কাতারস্টেট গ্র্যান্ড মসজিদ, দোহা ৷
কুয়েতকুয়েতের গ্র্যান্ড মসজিদ, কুয়েত সিটি ৷
ওমানসুলতান কাবুস গ্র্যান্ড মসজিদ, মাস্কাট ৷
বাহরাইনআল-ফাতেহ মসজিদ, মানামা ৷
জর্ডানকিং আবদুল্লাহ প্রথম মসজিদ, আম্মান ৷
লেবাননমোহাম্মদ আল-আমিন মসজিদ, বৈরুত৷
সিরিয়াউমাইয়া মসজিদ, দামেস্ক ৷
ইয়েমেনআল-সালেহ মসজিদ, সানা ৷
প্যালেস্টাইনআল-আকসা মসজিদ, জেরুজালেম ৷
ইরাকআল-কাদিমাইন মসজিদ, বাগদাদ ৷
মিশরআল-আজহার মসজিদ, কায়রো ৷
লিবিয়াগুর্গি মসজিদ, ত্রিপোলি ৷
সোমালিয়াআল-হুদাইদাহ মসজিদ, মোগাদিশু ৷
তুরস্কসুলতান আহমেদ মসজিদ (নীল মসজিদ), ইস্তাম্বুল ৷
যুক্তরাজ্যপূর্ব লন্ডন মসজিদ, লন্ডন ৷
ফ্রান্সপ্যারিসের গ্র্যান্ড মসজিদ
জার্মানিকোলন কেন্দ্রীয় মসজিদ
ইতালিরোম মসজিদ
স্পেনকর্ডোবার মসজিদ-ক্যাথেড্রাল ৷
নেদারল্যান্ডসওয়েস্টারমোস্কি, আমস্টারডাম ৷
বেলজিয়ামব্রাসেলসের গ্রেট মসজিদ
আলবেনিয়াএটহেম বে মসজিদ, তিরানা ৷
আর্জেন্টিনাকিং ফাহদ ইসলামিক কালচারাল সেন্টার, বুয়েনস আয়ার্স ৷
ব্রাজিলসাও পাওলোর মসজিদ
চিলিসেন্ট্রো ইসলামিকো ডি চিলি, সান্তিয়াগো ৷
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রআমেরিকার ইসলামিক সেন্টার, ডিয়ারবর্ন, মিশিগান ৷
কানাডাইসলামিক ফাউন্ডেশন অফ টরন্টো
মেক্সিকোসেন্ট্রো কালচারাল ইসলামিকো ডি মেক্সিকো, মেক্সিকো সিটি ৷

বাংলাদেশের জাতীয় মসজিদের নাম কি?

উত্তরঃ বাংলাদেশের জাতীয় মসজিদের নাম হলো বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ, যা রাজধানী ঢাকার পল্টনে অবস্থিত ৷ মসজিদটির স্থপতি আব্দুল হুসেইন এম থারিয়ানি ৷ বায়তুল মোকাররম দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম মসজিদ ৷ এই মসজিদে একসাথে ৩০,০০০ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারে ৷ এটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬০ সালে এবং মসজিদটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয় ১৯৬৮ সালে ৷ মসজিদটির আয়তন ২৬৯৪.১৯ বর্গ মিটার এবং উচ্চতা ৩০.১৮ মিটার ৷ মসজিদের শহর বলা হয় ঢাকা শহরকে ৷

বাংলাদেশের জাতীয় মসজিদ কোথায় অবস্থিত?

উত্তরঃ বাংলাদেশের জাতীয় মসজিদ রাজধানী ঢাকার প্রাণকেন্দ্র পল্টনে অবস্থিত। প্রতিদিন হাজার হাজার মুসল্লি এখানে নামাজ আদায় করেন ৷

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের প্রথম খতিব কে ছিলেন?

উত্তরঃ জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের প্রথম খতিব ছিলেন বিশিষ্ট আলেমে দ্বিন মাওলানা আবদুর রহমান কাশগরি (রহ.) ৷তিনি ১৯১২ সালে জন্মগ্রহণ করে এবং ১৯৭১ সালে মৃত্যু বরণ করেন ৷ তিনি ছিলেন একজন বিশিষ্ট আলেম, ভাষাবিদ, কবি ও লেখক।

কিছু কথাঃ

হযরত উমার (রা.) যখন বিভিন্ন শহর জয় করেন তখন তিনি বসরার শাসক আবু মুসা আশ-আরীকে এক চিঠিতে জামায়াত কায়েম করার উদ্দেশ্যে মসজিদ তৈরীর নির্দেশ দেন, এবং বলেন, জুময়ার দিন যেন সবাই জামে মসজিদে জুময়ার নামায জামায়াত সহকারে আদায় করে। তিনি অনুরুপ ভাবে কুফার শাসক সাদ বিন আবি ওয়াক্কাস এবং মিশরের শাসক আমর বিন আসের কাছে ও একটি চিঠি পাঠিয়ে মসজিদ তৈরীর নির্দেশ দেন, এবং সিরিয়ার এলাকার গভর্নরের কাছে ও একটি চিঠি পাঠিয়ে নির্দেশ দেন।

আর তাদেরকে গ্রাম ছেড়ে শহরে বাস করার অনুরোধ করেন। তাদের প্রতি প্রত্যেক শহরে একটি করে জামে মসজিদ নির্মাণের আদেশ দেন। লোকেরা হযরত উমার (রা.) এর নির্দেশ পালন করেন। অর্থাৎ যেখানে যেখানে ইসলামের দাওয়াত পৌছানো এবং এ দাওয়াত গ্রহন করেছিল, ঠিক সেই সকল এলাকায় মসজিদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

“মসজিদ হলো মুসলমানদের প্রতিষ্ঠিত যুদ্ধজয়ের বিজয় নিশান”।

তার মানে আমাদের দক্ষিন এশিয়া’তে ও প্রায় সমগ্র অঞ্চলেই ইসলামের দাওয়াত নিয়ে এসেছিলেন। অনেক এলাকায় ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হিসেবে মুসলমানেরা শত শত মসজিদ তৈরী করে আযান দিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। নারায়ে তাকবিরের ধ্বনিতে বাতিলের বুক কাপিয়ে আকাশ বাতাস প্রকম্পিত করেছিলেন। সময়ের পরিক্রমায় আজ মসজিদ সুন্দর হয়েছে, মসজিদের সংখ্যা ও বেড়েছে অনেক, মসজিদের নামাযীর সংখ্যা ও বেড়েছে ৷

Scroll to Top