[Question] মেঘনাদবধ কাব্যের প্রথম সর্গের নাম কি?
(ক) | অভিষেক |
(খ) | অশোকবন |
(গ) | প্রেতপুরী |
(ঘ) | শক্তিনির্ভেদ |
সংক্ষেপে ব্যাখ্যাঃ
মেঘনাদবধ কাব্যের প্রথম সর্গের নাম অভিষেক ৷
প্রথম সর্গঃ
- ১. কাব্যের অধিষ্ঠাত্রী দেবীর কাছে কবির প্রার্থনা।
- ২. রাজসভায় শোকাকুল রাবণ।
- ৩. ভগ্নদূত কর্তৃক বীরবাহুর মৃত্যুঘটনা বর্ণনা।
- ৪. প্রাসাদ শিখরে রাবণ কর্তৃক যুদ্ধক্ষেত্র পরিদর্শন। ৫. চিত্রাঙ্গদার আগমন ও রাবণের প্রতি অভিযোগ।
- ৬. বারুণী-মুরলার কথোপকথন।
- ৭. মুরলা-কমলার কথোপকথন।
- ৮. প্রভাষা ধাত্রীর ছদ্মবেশে মেঘনাদকে বীরবাহুর মৃত্যুসংবাদ জ্ঞাপন।
- ৯. প্রমীলা-মেঘনাদের কথোপকথন।
- ১০. মেঘনাদের লঙ্কা গমন ও সেনাপতিপদে অভিষেক।
মেঘনাদবধ কাব্য প্রথম সর্গ ব্যাখ্যা
রাম সীতা-উদ্ধারের জন্য বানর সৈন্য নিয়ে লঙ্কা অবরোধ কালে রাবণের অন্যতম পুত্র বীরবাহু যুদ্ধে নিহত হয়েছে। রাজসভায় সে সংবাদ পেয়ে রাজা রাবণ গভীর দুঃখে মগ্ন হলেন। সভাসদেরাও দুঃখিত। রাবণ এর জন্য নিজের ভাগ্যকে দোষারোপ করলেন। মন্ত্রী সারণ তাঁকে সান্ত্বনা দান করেন। দূতের মুখে বীরবাহুর মৃত্যুর ঘটনার বর্ণনা শুনে রাবণ বীরত্বের চেতনা অনুভব করলেন। তিনি প্রাসাদের উপরে উঠে যুদ্ধক্ষেত্রে মৃত বীরবাহুকে প্রত্যক্ষ করলেন। বীরপুত্রের মৃত্যুগৌরব তাঁর হৃদয়ে অনুভূত হল। চারদিকে সমুদ্র লঙ্কাকে ঘিরে রেখেছে। সেখানে রামের সেতুবন্ধু দেখে রাবণ সাগরকে ধিক্কার দিলেন। এরপর রাবণ রাজসভায় ফিরে এলেন। এ সময় বীরবাহুর মা চিত্রাঙ্গদা সঙ্গিনীদের নিয়ে রাজসভায় উপস্থিত হলে তাঁর কান্নায় সভায় শোকের ঝড় বয়ে গেল।
রাবণের কাছে চিত্রাঙ্গদা পুত্রের সন্ধান চাইলে তিনি পত্নীকে বীরপুত্রের জননী বলে সান্ত্বনা দিতে চাইলেন। চিত্রাঙ্গদা এই সর্বনাশা যুদ্ধের জন্য রাবণকে দায়ী করলেন। রাবণ লঙ্কাকে বীরশূন্য দেখে নিজেই যুদ্ধযাত্রার সিদ্ধান্ত নিলে যুদ্ধের প্রস্তুতিতে লঙ্কা টলে উঠল, সাগর গর্জে উঠল। জলতলে বারুণী মনে করলেন বুঝি ঝড় উঠেছে। সখী মুরলা জানাল যে, তা ঝড় নয়, রাবণের যুদ্ধযাত্রা। যুদ্ধের খবর শোনার জন্য বারুণী মুরলাকে লঙ্কাপুরীতে সখী সমুদ্রবাসিনী লক্ষ্মীর কাছে পাঠালেন। মুরলা লঙ্কায় গিয়ে লক্ষ্মীর কাছে যুদ্ধের ঘটনা শুনে মেঘনাদের অনুপস্থিতিতে বিস্ময় প্রকাশ করে। লক্ষ্মী জানালেন যে, মেঘনাদ সত্রী প্রমীলাকে নিয়ে প্রমোদ উদ্যানে অবস্থান করছেন এবং যুদ্ধে বীরবাহুর মৃত্যুর সংবাদ পাননি। মুরলাকে বিদায় দিয়ে লক্ষ্মী মেঘনাদের ধাত্রীমাতারূপে প্রমোদ উদ্যানে গেলেন। তাঁর কাছ থেকে সর্বশেষ ঘটনার বিবরণ শুনে মেঘনাদ বিলাসবেশ ছেড়ে রাবণের কাছে ছুটে এসে রামহত্যার জন্য নিজেই যুদ্ধ যাত্রার অনুমতি চাইলেন। রাবণ সর্বনাশা যুদ্ধে আতঙ্কিত মনে মেঘনাদকে সেনাপতি পদে বরণ করে পরদিন যুদ্ধযাত্রার অনুমতি দিলেন।
আরও পড়ুনঃ