রমজান মাসের ক্যালেন্ডার সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি

রমজান অন্যতম ফযীলতপূর্ণ একটি মাস। রমজান মাসে রোযা রাখা প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক নর-নারীর জন্য ফরজ ৷ তাই প্রত্যেকের রমজান মাসের ক্যালেন্ডার জানা দরকার ৷ ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি ২৭ জানুয়ারি প্রকাশ করেন ১৪৪৬ হিজরির রমজান মাসের ৷

রমজান মাসের ক্যালেন্ডার সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি

প্রত্যেক মুসলিমের জীবনে রমযানের গুরুত্ব অপরিসীম। রমজান হলো-পূণ্য অর্জনের শ্রেষ্ঠ মৌসুম। রহমত, মাগফিরাত ও জাহান্নাম হতে মুক্তির পয়গাম নিয়ে প্রতিবছর আমাদের মাঝে আসে পবিত্র মাহে রামাদান।

দীর্ঘ এক মাসের রোযা, তারাবী, তাহাজ্জুদ, কুরআন তিলাওয়াত ও অন্যান্য নেক আমলের মাধ্যমে বান্দা আল্লাহ পাকের নৈকট্য অর্জন করে এবং সব ধরনের গুনাহ থেকে বিরত থেকে অর্জন করে হৃদয় ও আত্মার পরিশুদ্ধি।

মাসজুড়ে তাকওয়ার অনুশীলনের মাধ্যমে তৈরি হয় বছরের বাকী দিনগুলো পাপমুক্ত থাকার যোগ্যতা। বান্দার এই অনুশীলনকে যথার্থ ও তার সংযমকে স্বার্থক করার জন্য প্রয়োজন যথাযথভাবে এ মাসের বন্দেগীগুলো আগ্রহের সঙ্গে সঠিকভাবে আদায় করা।

হে মুমিনগণ! তোমাদের উপর ছিয়ামকে ফরয করা হয়েছে- যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর ফরয করা হয়েছিলো- যাতে তোমরা মুত্তাকী হতে পারো। সূরা বাকারা : ১৮৩

রোযা বা সিয়াম কী?

সুবহে সাদেক থেকে শুরু করে সূর্যাস্ত পর্যন্ত শুধুই আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি এবং রহমতের আশায় পানাহার এবং যৌন চাহিদা পূরণ করা থেকে বিরত থাকার বাধ্যবাধকতা নিজের ওপর আরোপ করা, এরপর পুরো দিন এ নিয়ম মেনে চলা, ক্ষুধায় কাতর হলেও আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে না খাওয়া, কঠিন পিপাসার মুহূর্তেও কিছু পান না করা, মনের চাহিদা সত্ত্বেও যৌনসম্ভোগের ধারেকাছেও না যাওয়া, এককথায় আল্লাহর পথে মোজাহাদা ও সাধনা এবং প্রবৃত্তি দমনের নাম হচ্ছে রোজা।

রমজান মাসের ক্যালেন্ডার সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি

২৭ জানুয়ারি ১৪৪৬ হিজরির রমজান মাসের সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি প্রকাশ করেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৷ রমজান মাসের ক্যালেন্ডারের সময়সূচি অনুযায়ী প্রথম রমজান ঢাকার ভিতর সেহরির শেষ সময় ভোররাত ৫টা ৪ মিনিট ও ইফতারির সময় ৬টা ২ মিনিট।

সাহরী ও ইফতারের সময়সূচি(ইসলামিক ফাউন্ডেশন)

১৪৪৬ হিজরি রমযান২০২৫ খ্রিষ্টাব্দ মার্চবারসাহরীর শেষ সময়ইফতারের সময়
০১*০২ মার্চরবিবার৫-০৪ মিঃ৬-০২ মিঃ
০২০৩ মার্চসোমবার৫-০৩ মিঃ৬-০৩ মিঃ
০৩০৪ মার্চমঙ্গলবার৫-০২ মিঃ৬-০৩ মিঃ
০৪০৫ মার্চবুধবার৫-০১ মিঃ৬-০৪ মিঃ
০৫০৬ মার্চবৃহস্পতিবার৫-০০ মিঃ৬-০৪ মিঃ
০৬০৭ মার্চশুক্রবার৪-৫৯ মিঃ৬-০৫ মিঃ
০৭০৮ মার্চশনিবার৪-৫৮ মি৬-০৫ মিঃ
০৮০৯ মার্চরবিবার৪-৫৭ মি৬-০৬ মিঃ
০৯১০ মার্চসোমবার৪-৫৬ মি:৬-০৬ মিঃ
১০১১ মার্চমঙ্গলবার৪-৫৫ মি:৬-০৬ মিঃ
১১১২ মার্চবুধবার৪-৫৪ মিঃ৬-০৭ মিঃ
১২১৩ মার্চবৃহস্পতিবার৪-৫৩ মিঃ৬-০৭ মিঃ
১৩১৪ মার্চশুক্রবার৪-৫২ মিঃ৬-০৮ মিঃ
১৪১৫ মার্চশনিবার৪-৫১ মিঃ৬-০৮ মিঃ
১৫১৬ মার্চরবিবার৪-৫০ মিঃ৬-০৮ মিঃ
১৬১৭ মার্চসোমবার৪-৪৯ মিঃ৬-০৯ মিঃ
১৭১৮ মার্চমঙ্গলবার৪-৪৮ মিঃ৬-০৯ মিঃ
১৮১৯ মার্চবুধবার৪-৪৭ মিঃ৬-১০ মিঃ
১৯২০ মার্চবৃহস্পতিবার৪-৪৬ মিঃ৬-১০ মিঃ
২০২১ মার্চশুক্রবার৪-৪৫ মিঃ৬-১০ মিঃ
২১২২ মার্চশনিবার৪-৪৪ মিঃ৬-১১ মিঃ
২২২৩ মার্চরবিবার৪-৪৩ মিঃ৬-১১ মিঃ
২৩২৪ মার্চসোমবার৪-৪২ মিঃ৬-১১ মিঃ
২৪২৫ মার্চমঙ্গলবার৪-৪১ মিঃ৬-১২ মিঃ
২৫২৬ মার্চবুধবার৪-৪০ মিঃ৬-১২ মিঃ
২৬২৭ মার্চবৃহস্পতিবার৪-৩৯ মিঃ৬-১৩ মিঃ
২৭২৮ মার্চশুক্রবার৪-৩৮ মিঃ৬-১৩ মিঃ
২৮২৯ মার্চশনিবার৪-৩৬ মিঃ৬-১৪ মিঃ
২৯৩০ মার্চরবিবার৪-৩৫ মিঃ৬-১৪ মিঃ
৩০৩১ মার্চসোমবার৪-৩৪ মিঃ৬-১৫ মিঃ

*১লা রমযান চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল

রোজার ফজিলত ও আমল

ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের অন্যতম হচ্ছে রোজা। নামাজের পরেই মুসলমানদের প্রতি আল্লাহ তা’য়ালা যে ইবাদত ফরজ করেছেন তা হচ্ছে রমজানের রোজা। অতীতে সকল নবীর শরিয়তেই তাঁদের উম্মতগনের উপর আল্লাহ তা’আলা রোজা ফরজ করেন। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন,

“হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মতদের ওপর, যাতে তোমরা মুত্তাকী হতে পারো।” (সূরা আল-বাকারা: ১৮৩)।

মহান নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেন, “যখন রামাদান মাস আসে তখন জান্নাতের সবগুলো দরজা খুলে দেওয়া হয় আর জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয় আর শয়তানকে এ মাসে পায়ে শিকল পরিয়ে রাখা হয়।” (বুখারী ৩২৭৭ এবং মুসলিম ১০৭৯)।

নবীজি (সা.) আরো বলেন, “যে ব্যক্তি সহীহ নিয়তে, শুধুমাত্র সওয়াবের আশায় এবং ঈমানের সাথে রোজা পালন করে তার বিগত সব গুনাহ আল্লাহ মাফ করে দেন।” (বুখারী ১৯০১)।

রাসূল (সা.) বলেন, “বেহেশতের অনেকগুলো দরজা আছে। তার মধ্যে একটি দরজার নাম হলো আর রাইয়‍্যান। যারা রামাদান মাসে রোজা রাখবে তারা কিয়ামতের দিন এই রাইয়্যান নামক দরজা দিয়েই জান্নাতে প্রবেশ করবে। অন্য কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। প্রাসঙ্গিক আরেকটি হাদীসে বলা হয়েছে, “কিয়ামতের দিন ডাক দেয়া হবে, দুনিয়াতে কারা রোজা পালন করেছিলে? এরপর রোজাদাররা উঠে দাঁড়াবে এবং শুধুমাত্র তারাই রাইয়্যান দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবে। তাদের প্রবেশের পরই দরজা বন্ধ করে দেয়া হবে। যাতে করে এ দরজাটি দিয়ে আর কেউ প্রবেশ না করে।” (বুখারী ১৮৯৬-৯৭)।

নবী করিম (সা.) বলেছেন, “রোজাদারের জন্য দুটি আনন্দের মুহুর্ত আছে। একটি হলো যখন সে ইফতার করে আর দ্বিতীয়টি হলো তার রবের সাথে সাক্ষাতের মুহূর্ত।” (বুখারী: ১৯০৪, ইবনে মাজাহ: ১৬৩৮)।

রমজান মাস ক্ষমা লাভের মাস। রাসূল (সা) বলেন, “ঐ ব্যক্তির নাক ধূলায় ধূসরিত হোক যার কাছে রমজান মাস এসে চলে গেল অথচ তার পাপগুলো ক্ষমা করিয়ে নিতে পারল না।” (তিরমিজি: ৩৫৪৫)

রোজার ফজিলত সম্পর্কে হাদীসে কুদসীতে আল্লাহ বলেন, “মানব সন্তানের প্রতিটি নেক আমলের প্রতিদান দশ থেকে সাতশত গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়ে থাকে। আল্লাহ তাআলা বলেন, কিন্তু রোজার বিষয়টি ভিন্ন। কেননা রোজা শুধুমাত্র আমার জন্য, আমিই এর প্রতিদান দেব।” (মুয়াত্তা ইমাম মালেক: ৬৭৪)

রাসূল (সা) বলেছেন, “রোজার মাসের রাতগুলোতে যে ব্যক্তি আন্তরিকতার সাথে নফল ইবাদত করে, নামাজ আদায় করে তার অতীত জীবনের গুনাহগুলো মাফ করে দেওয়া হয়।” (বুখারী ১৯০১)

রোজাদারের মুখ থেকে আসা ঘ্রাণের প্রশংসা করে নবী করিম (সা) বলেন, “রোজা পালনকারীর মুখের গন্ধ আল্লাহ তা’আলার কাছে মিশকে আম্বরের চেয়েও প্রিয় হয়ে যায়।” (বুখারী ১৮৯৪)

প্রিয় ভিউয়ার, বাংলাদেশের সকল বিভাগের সকল জেলার রমজানের সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি পেতে প্রিয়বিডি”র সাথেই থাকুন ৷ ধন্যবাদ ৷

5/5(1 vote)
Scroll to Top