বুলেটের চাইতে ব্যালট শক্তিশালী উক্তিটি করেন কে? [MCQ]

5/5(3 votes)

[Question] বুলেটের চাইতে ব্যালট শক্তিশালী উক্তিটি করেন কে?

(ক)আব্রাহাম লিংকন
(খ)নেপোলিয়ন
(গ)জন এফ কেনেডি
(ঘ)উড্রো উইলসন

উত্তরঃ (ক) আব্রাহাম লিংকন


সংক্ষেপে ব্যাখ্যাঃ

বুলেটের চাইতে ব্যালট শক্তিশালী উক্তিটি করেন আব্রাহাম লিংকন ৷

আব্রাহাম লিংকন একটি কালজয়ী ব্যক্তিত্বের নাম। পৃথিবীর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য যাঁরা সংগ্রাম করেছেন, তিনি তাঁদের অন্যতম। তিনি ১৮০৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ৪ তারিখে আমেরিকার কেনটাকি প্রদেশের একটি ছোট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম টমাস লিংকন।

আব্রাহাম লিংকনের বাল্যকাল ছিল খুবই দরিদ্রের। বাল্যকাল তিনি মা বাবার সাথে জঙ্গলে ঘর বেঁধে কাটিয়েছেন। ছয় বছর বয়সে তিনি তাঁর মাকে হারান। উল্লেখ্য যে, তাঁর মা চিকিৎসার অভাবে মারা যায়। তাঁর মায়ের মৃত্যুর এক বছর পর তাঁর বাবা এক বিধবা নারীকে বিয়ে করেন। আব্রাহাম লিংকন তাঁর সৎমায়ের দ্বারা শিক্ষাগ্রহণে অনুপ্রাণিত হন। কিন্তু খুবই অবাক করা বিষয় হলো যে, তাঁর শিক্ষাগ্রহণের সময়কাল ১ বছরের বেশি নয়।

আব্রাহাম লিংকন ছিলেন খুবই সাহসী ও কর্মঠ। সত্যবাদীতা, সততা, সহযোগীতা মূলক মনোভাব, মধুর আচরণ ছিল তার নিত্যসঙ্গী। তিনি স্বাভাবিকভাবে রাজনীতির দিকে ঝুঁকে পড়েন এবং জীবনে প্রথমবারের মতো ইলিনয় প্রদেশের প্রাদেশিক নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে যোগদান করেন। রাজনৈতিক দূরদর্শিতার অভাবে প্রথমবার পরাজয় বরণ করলেও দ্বিতীয়বার ১৮৩৪ সালে জয়ী হন। ১৮৬৩ সালের ১ জানুয়ারি তিনি আইনত দাসপ্রথা বিলুপ্ত করেন। কিন্তু দক্ষিণ আমেরিকানরা তা মেনে নিতে পারে নি। তাঁরা বিভক্ত হয়ে আলাদা রাষ্ট্র গঠন করে আমেরিকাকে বিভক্ত করে।

পরবর্তীতে এই অভ্যন্তরীণ বিরোধ গৃহযুদ্ধের সূচনা করে। ওই বছরের ১-৩ জুলাই তারিখে যুক্তরাষ্ট্রের পেনসেলভেনিয়ার গেটিসবার্গে এই গৃহযুদ্ধে প্রায় আট হাজার মানুষ নিহত হয়। তাদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিসৌধে যুদ্ধের প্রায় চার মাস পর ১৯ নভেম্বর ১৮৬৩ সালে এক স্মরণসভায় আব্রাহাম একটি সংক্ষিপ্ত ও দুনিয়া কাঁপানো ভাষণ দেন।

এই ভাষণের সবচেয়ে লক্ষণীয় দিক হলো মাত্র একটি বাক্যে গণতন্ত্রের নিখুঁত সংজ্ঞা দিয়েছেন লিংকন। তার ভাষ্যমতে, ‘গণতন্ত্র হলো জনগণের সরকার, জনগণের দ্বারা সরকার, জনগণের জন্য সরকার’। তাঁর এই ভাষণ পরবর্তী সময়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পাঠ্যবইয়ে গণতন্ত্রের সংজ্ঞা হিসেবে স্থান করে নিয়েছে।

আব্রাহাম বহু ত্যাগের বিনিময়ে দীর্ঘ ৫ বছর রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে জয়লাভ করেন। তাঁর এই কৃতকর্মের জন্য তিনি সর্বসাধারণের নিকট খুবই জনপ্রিয়তা লাভ করেন। সকলেই তাকে নেতা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

আব্রাহাম লিংকন তাঁর জীবনের অধিকাংশ সময় মানবতার কল্যাণে ব্যয় করেছেন। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও দাসপ্রথা বিলুপ্ত করতে গিয়ে আততায়ীর গুলিতে তিনি ১৫ এপ্রিল ১৮৬৫ সালে নিহত হন।

মানবদরদী এই মহা নেতা মানুষের স্মৃতিপটে আজীবন অমর হয়ে বেঁচে থাকবেন।

আরও পড়ুনঃ