ব্যবস্থাপনা সার্বজনীন উক্তিটি কার? [MCQ]

5/5(3 votes)

[Question] ব্যবস্থাপনা সার্বজনীন উক্তিটি কার?

(ক)এরিস্টটল
(খ)সক্রেটিস
(গ)হেনরি ফেয়ল
(ঘ)লুকা প্যাসিওলি

উত্তরঃ (খ) সক্রেটিস


সংক্ষেপে ব্যাখ্যাঃ

ব্যবস্থাপনা সার্বজনীন উক্তিটি সক্রেটিস এর ৷

সক্রেটিসের জন্ম ইউরোপের গ্রিসে। সেই প্রাচীন গ্রিসে। যিশুখ্রিষ্টেরও জন্মের ৪৭০ বছর আগে। গ্রিস তখন সারা দুনিয়ায় আদর্শস্থানীয়। তখন সবকিছুতে বিশ্বের অপরাপর সকলের চেয়ে এগিয়ে। জ্ঞান-গরিমা, জীবনযাপন, যুদ্ধবিদ্যা, রাজ্য শাসনপদ্ধতি-সবকিছুতে। বলা যায় পশ্চিমে সভ্যতার সূর্যটা উদয় হয়েছে প্রথমে গ্রিসে। গ্রিস তাই সভ্যতার পাদপীঠ। প্রাচীন পৃথিবীর বুকে অবাক চোখে তাকিয়ে-দেখা ভূখণ্ড।

কোথায় সেই ভূখণ্ড? প্রাচীন সেই ভূখণ্ড বলকান উপদ্বীপের দক্ষিণে। ইজিয়ান সাগরের পাড়ে। অনেকগুলো দ্বীপ নিয়ে এই দেশ। দেশটি পর্বতময়। সমুদ্রউপকূলে অবস্থিত। সমুদ্রপথে তাই যোগাযোগের সুবিধা অনেক। সমুদ্রপথ তাদের বাণিজ্যের পথ খুলে দেয়। বাইরের দুনিয়ার সাথে সংযোগ ঘটায়। বৈদেশিক বাণিজ্যে তারা পারদর্শী হয়ে ওঠে। সামুদ্রিক বাণিজ্য তাদের সমৃদ্ধি এনে দেয়।

গ্রিস নামটি আদি নাম নয়। এর আদি নাম ‘হেলাজ’। আর হেলাজের অধিবাসীর পরিচয় ছিল ‘হেলেনি’ হিসেবে। অনেককাল পরে হেলাজ নামের দেশটি গ্রিস নাম ধারণ করে। এই নাম ধারণ করে ঐতিহাসিককালে। ঐতিহাসিককাল হলো সে-সময়, যখন থেকে ইতিহাসের প্রমাণপত্র পাওয়া যায়।

গ্রিস নাম ধারণ করার বহু আগে থেকেই এই দেশ সভ্য জনপদ হিসেবে যাত্রা শুরু করে। এখানকার ঐ পুরোনো সভ্যতার নাম হচ্ছে মাইসেনিয়ান সভ্যতা।

মাইসেনিয়ানদের এখানে বসবাস খ্রিষ্টপূর্ব ৩০০০ অব্দের দিকে। আর এই অধিবাসীরা কালক্রমে নিজস্ব সভ্যতা জন্ম দেয়। এই সভ্যতা অব্যাহত ছিল খ্রিষ্টপূর্ব ১৬০০ থেকে খ্রিষ্টপূর্ব ৯০০ অব্দ অবধি। মাইসেনিয়ান এই সভ্যতার সঙ্গে যোগাযোগ ছিল তখনকার দুনিয়ার অপরাপর অংশের সভ্যতাসমূহের। মধ্যপ্রাচ্যের মেসোপটেমিয়ার (বর্তমান ইরাক) সভ্যতার সাথে ছিল তাদের যোগাযোগ। ছিল মিশরীয় সভ্যতার সাথেও।

তা হলে প্রাচীনকালের মাইসেনিয়ানরাই কি এখানকার আদি মানুষ? না, তারাই একমাত্র আদি মানুষ নয় এখানকার। তারা একটি অংশ মাত্র। তারা ছাড়াও আরও দুটি জনস্রোত এসে মিশেছে এখানে। আকিআন আর ডোরিয়ানগণ। মাইসেনিয়ার সভ্যতার শেষের দিকে এখানকার অধিবাসীদের এক অংশ কৃষিকর্মে মনোনিবেশ করে। তারা স্থায়ী আবাস গড়ে তোলে এখানে। অন্যরা বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে।

মূল গ্রিস ভূখণ্ড মূলত পর্বতসংকুল। অনেকটা অনুর্বর। তাই নিরবচ্ছিন্নভাবে বৃহৎ আকারের জনপদ গড়ে ওঠেনি এখানে। গড়ে উঠতে পারেনি প্রাকৃতিক কারণে। পাহাড় পর্বত দিয়ে বিচ্ছিন্ন উপত্যকায় কৃষিজীবী মানুষেরা ছোট ছোট শহর গড়ে তুলেছে। এসব শহরকে কেন্দ্র করে তারা বসতি স্থাপন করেছে। তবে উপত্যকাগুলো ছিল বেশ উর্বর। উপত্যকার ভূমি ছিল চাষের উপযোগী। সমুদ্র ছিল তাদের হাতের নাগালে।

গ্রিস আর গ্রিসের ঐ মানুষের প্রামাণিক ইতিহাসের সময়কাল খ্রিষ্টপূর্ব ৭০০ অব্দ থেকে। মোটামুটি যিশুখ্রিষ্টের জন্মের সাতশো বছর আগে। তখনও হেলেনীয় যুগ। হেলেনীয় জগৎ তখন পাহাড়ি উপত্যকায় ছড়িয়ে- ছিটিয়ে থাকা ছোট ছোট জনপদ ও জনগোষ্ঠীতে বিভক্ত। প্রতিটি জনপদ ছিল রাজনৈতিকভাবে পরস্পর বিচ্ছিন্ন। স্বতন্ত্র শহর-নগরে কেন্দ্রীভূত। তবে তাদের মধ্যে ভাষা ও ঐতিহ্যগত ঐক্যের বন্ধন তো ছিলই।

সক্রেটিস জন্মেছিলেন ঐ ঐতিহাসিক কালের গ্রিসে। যখন হেলাজ নামের ঐ আদি জনপদ গ্রিস নামে পরিচিতি লাভ করেছে। তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন গ্রিসের এথেনস নগরীতে। এথেন্স হলো ঐ সময়ে গ্রিসের প্রাণকেন্দ্র। সবচেয়ে সমৃদ্ধ জনপদ। নগরী। নগররাষ্ট্র। তাঁর জন্মকাল খ্রিষ্টপূর্ব ৪৭০ সাল।

আরও পড়ুনঃ

Scroll to Top