[Question] Das Capital গ্রন্থের রচয়িতা কে?
(ক) | হিটলার |
(খ) | কার্ল মার্কস |
(গ) | লেলিন |
(ঘ) | টলস্টয় |
সংক্ষেপে ব্যাখ্যাঃ
Das Capital গ্রন্থের রচয়িতা হলেন কার্ল মার্কস ৷
‘বিজ্ঞানে প্রশস্ত রাজপথ বলে কিছু নেই, একমাত্র সেই ব্যক্তিই তার উজ্জ্বল শীখরে পৌছাতে পারে, যে ক্লান্তির ভয়ে ভীত না হয়ে তার পাথুরে পায়ে- চলা-পথে কষ্ট করে চলেন’- ক্যাপিটাল-এর প্রথম খণ্ডের ফরাসী সংস্করণের ভূমিকায় উদ্বৃত বাক্যটি মার্কসেরই, প্রকাশক মরিস লাশাত্র-কে লেখা চিঠির অংশ। এই অভিজ্ঞতাটাই মার্কসের হয়েছিল-ক্যাপিটাল লিখতে গিয়ে। আর তাই, এই দেড়শ বছর পরেও, অর্থনৈতিক চর্চ্চার ক্ষেত্রে, বৈজ্ঞানিক চর্চ্চার ক্ষেত্রে, সমাজতাত্ত্বিক চর্চ্চার, ক্ষেত্রে, রাজনৈতিক চর্চ্চার ক্ষেত্রে সমান গুরুত্ব বহন করছে মার্কসের ‘ক্যাপিটাল’। সম্প্রতি এক জরিপে বলা হয়েছে, বর্তমানে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া বইয়ের তালিকায় ‘ক্যাপিটাল’ অন্যতম। এই ক্রেতাদের একটা বড় অংশই তরুণ, যারা ভালোভাবে জানতে চাচ্ছে বর্তমান বিশ্ব ব্যবস্থাটাকে।
কি আছে মার্কসের ‘ক্যাপিটাল’-এ, যার জন্যে দেড়শ বছর ধরে এতো আগ্রহ-আলোচনা-সমালোচনা বইটা নিয়ে অথবা ফ্রেডারিক এঙ্গেলসই বা কেন বলেছিলেন- ‘পুঁজিপতি এবং শ্রমিকরা যতোদিন ধরে পৃথিবীতে আছে, ততোদিনের মধ্যে এমন কোন বই বেরোয়নি, শ্রমিকদের কাছে যার গুরুত্ব আলোচ্য বইটার সমান’? ক্যাপিটাল-এ মার্কস মূলত বিশ্লেষণ করেছেন পুঁজিবাদী অর্থনীতিকে এবং উদ্ঘাটন করেছেন তার এমন কিছু গূঢ় বিষয়, যা নিয়ে বহুকাল যাবত বিভ্রান্তি তৈরি করে আসছিলেন পুঁজিবাদী অর্থনীতিকরা। মার্কসের ৩ খণ্ডে লেখা ক্যাপিটাল-এর প্রথম খণ্ডে বিশ্লেষণ করেছেন পুঁজিবাদী উৎপাদন প্রক্রিয়া।
এই খণ্ডেই আলোচিত হয়েছে তাঁর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উদ্ঘাটন-উদ্বৃত্ত মূল্যের তত্ত্ব। দ্বিতীয় খণ্ডে পুঁজির আবর্তন প্রক্রিয়া বিশ্লেষণ করেছেন, আর তৃতীয় খণ্ডে পুঁজি চলাচলের প্রক্রিয়ায় উদ্ভূত রূপসমূহের অনুসন্ধান। প্রথম খণ্ড প্রকাশিত হয় ১৮৬৭ সালে। যদিও তা লেখা শেষ হয়েছিল বেশ আগে, কিন্তু বারবার বিশ্লেষণ, বিষয়বস্তু সম্পর্কে আরো অনুসন্ধান, প্রয়োজনীয় অধ্যয়ন-এসব ক্ষেত্রে মার্কস প্রচুর সময় নিয়ে প্রত্যেকেটা বিষয় আরো স্পষ্ট করার চেষ্টা করতেন। মার্কসের নিজের কথায়-যতোক্ষণ না গোটা ব্যাপারটা সামগ্রিকভাবে আমার সামনে উপস্থিত হচ্ছে, ততোক্ষণ কোনো কিছু পাঠানোর সিদ্ধান্ত আমি নিতে পারছি না।
অর্থনীতির জটিল বিষয়সমূহ আলোচনার জন্যে মার্কসকে আশ্রয় নিতে হয়েছিল বিজ্ঞান- গণিতসহ অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয়ের। ফলে আলোচনা যে সবার জন্যে সহজবোধ্য হয়নি, তা অনুমান করা যায়। মার্কস, নিজেই লিখেছেন-ক্যাপিটালে যে পদ্ধতি নিয়োগ করা হয়েছে, তা যে খুবই কম বোধগম্য হয়েছে, তা বোঝা যায় সে বিষয়ে পরস্পরবিরোধী বিভিন্ন ধারণা থেকে। এটি প্রথম খণ্ড প্রকাশের কিছুদিন পরের কথা।
বাংলা ভাষার পাঠকদেরকে ক্যাপিটালের সাথে একটা প্রাথমিক পরিচয় করিয়ে দেয়ার চেস্টা করেছিলেন রেবতী বর্মন। সেই উদ্দেশ্যেই তিনি তৈরি করেছেন এই সহজ সারসংক্ষেপ, যা প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ১৯৩৮ সালে। অসাধারণ পণ্ডিত ছিলেন রেবতী বর্মন, মার্কসবাদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লেখা তার প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ২০-এর উপরে।
ক্যাপিটাল-এর এই সংক্ষিপ্তসারটি পাঠকদের জন্যে সাধারণ ধারণা অর্জনে সহায়ক হবে, কিন্তু তা মূল ‘ক্যাপিটাল’-এর বিকল্প নয় কখনোই। রেবর্তী বর্মন লিখেছিলেন সাধুভাষায়, বর্তমান সময়ের পাঠকদের সুবিধার জন্যে আমরা তা কথ্য ভাষায় পরিবর্তন করেছি, বাকি সবই অপরিবর্তিত রয়েছে। বইটি পাঠকদের মূল ‘ক্যাপিটাল’ পড়ার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে বলে আমরা মনে করি অথবা তা ক্যাপিটাল-এর মূল বিষয়বস্তুটা পাঠকদের জানাতে পারবে।
পরিশেষে, Das Capital গ্রন্থের রচয়িতা হলো কার্ল মার্কস(Karl Marx) ৷৷
Also Read More:—